সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শ্রীল প্রভুপাদের গল্পে উপদেশ

এক গ্রামে এক গরীব বুড়ি বাস করতজ্বালানীর অভাবে সে কিছু দূরে এক বনের মধ্যে ঢুকলশুকনো ডালপালা জোগাড় করে একটি বড় বোঝা বাঁধলবোঝাটি একটু ভারী হওয়ার জন্য কোনভাবে বুড়ি তা নিজের মাথায় তুলতে পারল নাবার বার চেষ্টা করেও বিফল হলসাহায্য করার জন্য কাছাকাছি কোন লোকজনকেও সে দেখতে পেল নাতখন সে ভগবানকে ডাকতে লাগল-হে ভগবান, ঘরে নাতি- নাতনিরা না খেয়ে আছেআমি জ্বালানি নিয়ে গেলে ভাত রান্না হবেহে দয়াময়, কৃপা করে এই বোঝাটি তুলে দাওহে হরি, বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে আমাকে বোঝাটি তুলে দাওবুড়িমার কাতর মিনতি শুনে হঠাৎ এক সুন্দর বালক এসে হাজির হলআমারও সময় নেই, শীগগিরি বলো- কি করতে হবে আমাকে? বালকটি বলল 
বুড়িমা বলল, মাথায় বোঝাটি তুলে দাওঅমনি বালকটি বোঝাটি তুলে দিয়ে বলল- আর কি করতে হবে ? উত্তরে বুড়িমা বলল- না বাবা, আর কিছু চাই নাতক্ষুনি ছেলেটি হাওয়ায় অদৃশ্য হয়ে গেলবুড়ি কাউকে দেখতে না পেয়ে ঘরের দিকে বোঝা মাথায় চলতে লাগল
 
 
হিতোপদেশ - বর্তমান যুগে অধিকাংশ মানুষই পরমেশ্বর ভগবানকে নিজেদের চাকর বা দাস বানাতে চায়ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন- আমার প্রীতি সাধন করে আমার সেবায় নিয়োজিত হও তাহলে তোমার অভাব অভিযোগ আমি নিজের মাথায় বহন করব  কিন্তু সাধারণত মানুষ নিজের স্ত্রী-পুত্র, নাতি-নাতনী, আত্মীয় স্বজনের প্রীতি সাধনের জন্য ভগবানের কাছ থেকে সেবা আদায় করতে চায়তাদের প্রার্থনা এইরকম- হে ভগবান, আমার মেয়ের জন্য ভাল পাত্র এনে দাও, আমার ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়িয়ে দাও, আমি যেন বেশী ভোট পেয়ে যাই তুমি কৃপা কর, আমাকে মামলায় জিতিয়ে দাও ইত্যাদি অর্থাৎ, তারা নিজের সুখের জন্য আত্মপ্রীতির জন্য ভগবানকে গোলাম মনে করেতারা পরম প্রভুর সেবা না করে তাদের নিজেদের সেবা করার জন্য পরমেশ্বর ভগবানকে আহ্বান করেএছাড়া এই বুড়ির মতো মানুষ এই ক্ষনস্থায়ী জগতের অত্যন্ত তুচ্ছ বস্তুর প্রতি আসক্তসর্বশক্তিমান ভগবান যা দিতে সক্ষম তা আমাদের কল্পনার অতীত কিন্তু জড়ভোগে অন্ধ মানুষ শুধু সংসারের বোঝা অনাদি অনন্তকাল ধরে তাদের বইতে থাকেশ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু প্রার্থনা করেছেন-হে জগদীশ! আমি ধন, জন বা সুন্দরী রমণী কামনা করি না; আমি কেবল এই কামনা করি যে জন্মে জন্মে তোমাতেই আমার অহৈতুকী ভক্তি হোক।"

মন্তব্যসমূহ

Yaishik বলেছেন…
সুন্দর প্রভু
হরে কৃষ্ণ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও রামানন্দ রায় সংবাদ

  শ্ৰীরামানন্দ রায় রাজা শ্ৰী প্ৰতাপরুদ্রের অধীন পূৰ্ব্ব ও পশ্চিম গোদাবরীর বিশ্বস্ত শাসন কৰ্ত্তার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চৈতন্য মহাপ্ৰভু যখন দক্ষিণ দেশে যাত্ৰা করেন, শ্ৰীসাৰ্বভৌম আচার্য্য বিশেষ অনুরোধ করেন মহাপ্রভু যেন শ্ৰীরামানন্দ রায়ের সঙ্গে মিলিত হন । “তোমার সঙ্গে যোগ্য তেঁহো একজন, পৃথিবীতে রসিক ভক্ত নাহি তার সম''।।চৈঃচঃ মধ্যঃ শ্রীচৈতন্য মহাপ্ৰভু দক্ষিণ দেশ অভিমুখে যাত্ৰা করেন। হরিনামের প্রেম বিতরণ করতে করতে এলেন পশ্চিম গোদাবরীর তীরে । পন্ডিত সাৰ্ব্বভৌমের অনুরোধ অনুযায়ী শ্ৰীরামানন্দ রায়ের সঙ্গে মিলিত হবার ইচ্ছা মহাপ্ৰভুর মনে সদা জাগ্রত ছিল । শ্ৰীমহাপ্ৰভু গোদাবরীর মনোহর তটে এক বৃক্ষমূলে বসে আছেন । তার অঙ্গ কান্তিতে চতুৰ্দ্দিক যেন আলোকিত হচ্ছিল । এমন সময় অনতিদূরে রাজপথ দিয়ে স্নান করতে যাচ্ছেন শ্ৰীরামানন্দ রায়, সাথে বৈদিক ব্ৰাহ্মণগনের বিবিধ বাজনা । শ্ৰীরামানন্দ রায় দূর থেকে উপবিষ্ট বৃক্ষমুলে কান্তিযুক্ত সন্ন্যাসীবরকে একদৃষ্টিতে দৰ্শন করতে লাগলেন এবং মহাপ্ৰভুও তঁকে অপলক নেত্ৰে দেখতে লাগলেন । নয়নে নয়নে হল মিলন । তারপর শ্ৰীরামানন্দ পালকি থেকে নেমে শ্ৰীমহাপ্ৰভুর চরনে দন্ডবৎ ক...

কৃষ্ণ কোন ভক্তকে কীভাবে সাহায্য করেন?????

  কৃষ্ণ কোন ভক্তকে কীভাবে সাহায্য করেন ? প্রশ্ন : আমার প্রশ্নটি খুব তুচ্ছ, কিন্তু তবুও আমি জানতে চাই কীভাবে কৃষ্ণ কোন ভক্তকে সাহায্য করেন? শ্রীল জয়প তাকা স্বামী গুরুমহারাজ: কৃষ্ণ বিভিন্ন উপায়ে একজন ভক্তকে সাহায্য করতে পারেন। আমরা তাঁর অনুগ্রহের পন্থাগুলিকে পরিমাপ করতে পারি না। যেমন ধরুন, একটি মজার গল্প আছে। একটি বড় বন্যাকবলিত এলাকায় এক লোক ছিল। সে তার ঘরে গিয়ে বলত, হে ভগবান! আমাকে এই বিশাল বন্যা থেকে উদ্ধার কর। আর তখন একটি নৌকা এল, সে বলল, না না, আমি চাই কেবল ভগবান এসে আমাকে উদ্ধার করবে। এরপর হেলিকপ্টার এল। না, না, আমাকে কেবল ভগবানই উদ্ধার করবে। এমনকি যখন কৃষ্ণ যখন নিজে সেই ব্যক্তির সামনে উপস্থিত হলেন, সে বলল, তুমি কেন আমাকে আগে বাঁচাওনি? তিনি বললেন, আমি একটি নৌকা পাঠালাম, একটি হেলিকপ্টার পাঠালাম, তুমি আর কী চাও? তো এভাবে তিনি বাহ্যিকভাবে বা অভ্যন্তরীণ উপায়ে সহায়তা করতে পারেন। গীতায় বলা আছে কৃষ্ণ জ্ঞান, স্মৃতি ও বিস্মৃতি দান করেন। সুতরাং তিনি আমাদের সংশয়ও নাশ করেন। ~শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ ২৪শে জুলাই, ২০১৮ চেন্নাই, ভারত

মহান বৈষ্ণব আচার্য শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের তিরোধান তিথি

২৬/১২/২০১৮ মহান বৈষ্ণব আচার্য শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের তিরোধান তিথিতে গৌড়িয় সিংহপুরুষখ্যাত এই মহান আচার্যের জীবনী জানার জন্য পড়ুন নিচের বিশেষ লেখাটি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যৌবনে মাত্র ৪৮ বছর বয়সে জগত থেকে অন্তর্হিত হন। যদিও তাঁর পার্ষদ এবং দৃঢ়চেতা পরম্পরা আচার্যগণ, মহান বৈষ্ণবগণ এই অভিযান এগিয়ে নিয়ে গেছেন, কিন্তু একসময় কিছুকাল পরে মহাপ্রভুর সংকীর্তন আন্দোলন অন্তর্হিত হয়। মহাপ্রভুর শিক্ষা, মহাপ্রভুর নিদের্শনা এবং মহাপ্রভুর ধাম এই জগৎ থেকে অন্তর্হিত হয় এবং তদস্থলে সকল অপসম্প্রদায় গুলো আবির্ভূত হয়ে এমন শিক্ষার বিস্তার ঘটালো যা সম্পূর্ণরূপে মহাপ্রভুর শিক্ষার বিপরীত। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে পবিত্র ধর্মের নীতির ভিত্তিতে গঠিত, কিন্তু তাদের সেই ক্রিয়াকর্মগুলো ছিল সম্পূর্ণ অধার্মিক। এটি কলিযুগের আরেকটি চরিত্র। এই যুগ অধর্মের, তাই অধর্মীয় নীতিসমূহের ব্যাপক প্রসার ঘটবে এবং ধার্মিক নীতিসমূহ উপেক্ষিত হবে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের পরে তা ঘটেছিল। অল্পকথায় বলতে গেলে, তাঁরা চৈতন্য মহাপ্রভুর নামে ধর্মের স্তম্ভস্বরূপ ৪টি বিধিনিষেধ ভঙ্গ ...