এক গ্রামে এক গরীব বুড়ি বাস করত। জ্বালানীর
অভাবে সে কিছু দূরে এক বনের মধ্যে ঢুকল। শুকনো
ডালপালা জোগাড় করে একটি বড় বোঝা বাঁধল। বোঝাটি একটু ভারী হওয়ার জন্য কোনভাবে বুড়ি তা নিজের মাথায়
তুলতে পারল না। বার বার চেষ্টা করেও বিফল হল। সাহায্য করার
জন্য কাছাকাছি কোন লোকজনকেও সে দেখতে পেল না। তখন সে
ভগবানকে ডাকতে লাগল-“হে ভগবান, ঘরে নাতি- নাতনিরা না খেয়ে আছে। আমি জ্বালানি
নিয়ে গেলে ভাত রান্না হবে। হে দয়াময়, কৃপা করে এই বোঝাটি তুলে দাও। হে হরি, বেলা গড়িয়ে
যাচ্ছে আমাকে বোঝাটি তুলে দাও।” বুড়িমার কাতর
মিনতি শুনে হঠাৎ এক সুন্দর বালক এসে হাজির হল। আমারও সময়
নেই, শীগগিরি বলো-
কি করতে হবে আমাকে? বালকটি বলল।
বুড়িমা বলল, মাথায় বোঝাটি তুলে দাও। অমনি বালকটি বোঝাটি তুলে দিয়ে বলল- আর কি করতে হবে ? উত্তরে বুড়িমা বলল- না বাবা, আর কিছু চাই না। তক্ষুনি ছেলেটি হাওয়ায় অদৃশ্য হয়ে গেল। বুড়ি কাউকে দেখতে না পেয়ে ঘরের দিকে বোঝা মাথায় চলতে লাগল।
বুড়িমা বলল, মাথায় বোঝাটি তুলে দাও। অমনি বালকটি বোঝাটি তুলে দিয়ে বলল- আর কি করতে হবে ? উত্তরে বুড়িমা বলল- না বাবা, আর কিছু চাই না। তক্ষুনি ছেলেটি হাওয়ায় অদৃশ্য হয়ে গেল। বুড়ি কাউকে দেখতে না পেয়ে ঘরের দিকে বোঝা মাথায় চলতে লাগল।
হিতোপদেশ - বর্তমান যুগে অধিকাংশ মানুষই
পরমেশ্বর ভগবানকে নিজেদের চাকর বা দাস বানাতে চায়। ভগবান
শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন- আমার প্রীতি সাধন করে আমার সেবায় নিয়োজিত হও তাহলে
তোমার অভাব অভিযোগ আমি নিজের মাথায় বহন করব। কিন্তু সাধারণত মানুষ নিজের স্ত্রী-পুত্র, নাতি-নাতনী, আত্মীয়
স্বজনের প্রীতি সাধনের জন্য ভগবানের কাছ থেকে সেবা আদায় করতে চায়। তাদের
প্রার্থনা এইরকম- হে ভগবান, আমার মেয়ের জন্য ভাল পাত্র এনে দাও, আমার ব্যাংক
ব্যালেন্স বাড়িয়ে দাও, আমি যেন বেশী ভোট পেয়ে যাই তুমি কৃপা কর, আমাকে মামলায়
জিতিয়ে দাও ইত্যাদি অর্থাৎ, তারা নিজের সুখের জন্য আত্মপ্রীতির জন্য ভগবানকে গোলাম মনে
করে। তারা পরম প্রভুর সেবা না করে তাদের নিজেদের সেবা করার জন্য
পরমেশ্বর ভগবানকে আহ্বান করে। এছাড়া এই বুড়ির মতো মানুষ এই ক্ষনস্থায়ী জগতের অত্যন্ত
তুচ্ছ বস্তুর প্রতি আসক্ত। সর্বশক্তিমান ভগবান যা দিতে সক্ষম তা আমাদের কল্পনার অতীত কিন্তু
জড়ভোগে অন্ধ মানুষ শুধু সংসারের বোঝা অনাদি অনন্তকাল ধরে তাদের বইতে থাকে। শ্রী চৈতন্য
মহাপ্রভু প্রার্থনা করেছেন-“হে জগদীশ! আমি ধন, জন বা সুন্দরী
রমণী কামনা করি না; আমি কেবল এই কামনা করি যে জন্মে জন্মে তোমাতেই আমার অহৈতুকী
ভক্তি হোক।"
মন্তব্যসমূহ
হরে কৃষ্ণ