সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমরা কারো সাথে দেখা হলে হরে কৃষ্ণ কেনো বলি?


অনেকে মনে করে " হরেকৃষ্ণ " শব্দটি ইসকন প্রচার করে এবং এটি তাদের সঙ্ঘের নিজস্ব। হরেকৃষ্ণ বল্লে বা সম্বোধন করলে অধিকাংশ লোকই মনে করে লোকটা ইসকনের। এটা তাদের অজ্ঞতাবশত: মনে করে থাকে। অনেকে সম্বোধনে "জয়গুরু " বলে কিন্তু মহাপবিত্র শব্দ" হরেকৃষ্ণ" বা কৃষ্ণনাম বলে না। আবার অনেকে কৃষ্ণনাম বলতে লজ্জাবোধ করে পারিপার্শ্বিক অবস্থার চাপে। হরেকৃষ্ণ বল্লে বন্ধুবান্ধবরা হয়তোবা টিটকারি মারবে তাই।

        মহা পবিত্র ও আনন্দদায়ক শাশ্বত আশ্রয় " হরেকৃষ্ণ " নাম রেখেছেন স্বয়ং ভগবান বলরাম। বলরামও কৃষ্ণের অংশ। আর "কৃষ্ণনাম " রেখেছেন গর্গমুনি ধ্যানের মাধ্যমে জেনে।

           যে নাম জপছে অবিরামভাবে সাধু-মুনী-ঋষি ও দেবতারা। গীতায় ভগবান বলেছেন, তিনি (পরমেশ্বর কৃষ্ণ) দেবতাদেরও আদি। অর্থাৎ তিনি অনাদির আদি গোবিন্দ, পরমেশ্বর ভগবান। একথা স্বয়ং সৃস্টিকর্তা ব্রহ্মাজীও বলেছেন। দেবতারাও ভগবানের মায়ায় মোহিত। সাধারণ মানবের কী কথা?

               তাই, যে পবিত্র নামে আপনি উদ্ধার পাবেন বা মুক্ত হবেন, সেই মহাপবিত্র কৃষ্ণ নাম "হরেকৃষ্ণ" নামে লজ্জা থাকার কথা না।

***সারাজীবন কৃষ্ণনাম না করে শ্মশানঘাটে মৃত ব্যক্তির জন্য হরিবল বা কৃষ্ণনাম বলে কী হবে? 

হয়তো পুরাটা শুদ্ধ হতে পারে বা মৃত ব্যক্তির কিছুটা সদ্গতি হতে পারে। কিন্ত পূর্ণ মুক্তি হবে না।
মৃত্যুর পূর্বেই মহাপবিত্র হরিনাম বা কৃষ্ণ নাম নিজে জপ করুন। শুদ্ধ ভক্তসঙ্গে কৃষ্ণ নাম শ্রবণ ও কীর্তন করুন। বৃন্দাদেবীকে প্রণাম ও আরতী করুন।

                    এ মনকি হাঁচি বা হেঁচ্ছো আসলেও "হরেকৃষ্ণ" বলতে হয়।  হাঁচিতে ভগবানের কৃপায় ব্রেইন বা মস্তিষ্ক পরিষ্কার হয়। তাই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ভগবানের নাম নিতে হয়।

           " হরেকৃষ্ণ" নাম সকল কাজ শুরু করার আগে বলুন। কারো সাথে দেখা হলে "হরেকৃষ্ণ" বলে নমস্কার বলতে পারেন। যে ব্যক্তি এই কৃষ্ণনাম শুনলো, সেও উপকৃত হবে। "হরেকৃষ্ণ" এই নামটি সর্বজনীন। এটা ইসকনের একার নয়। হরেকৃষ্ণ শব্দে ভগবানের অন্তরঙ্গা শক্তি "হরা", যা রাধারাণীর আরেক নাম, সম্বোধনে হরে অর্থাৎ রাধারাণীকে সম্বোধন করা হয়। আর "কৃষ্ণ" শব্দের অর্থ সর্বাকর্ষক অর্থাৎ যিনি সবকিছুকে আকর্ষণ করেন। বৃন্দাবনের গোপ-গোপী, বৃক্ষ, লতাপাতা, পশুপাখি, গাভীকে তিনি আকর্ষণ করেছেন। কামদেব মদনকে পর্যন্ত আকর্ষণ করেছেন। এজন্য কাহকে হাই হ্যালো ম্যাসেজ না বলে "হরেকৃষ্ণ" বলা উচিত।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও রামানন্দ রায় সংবাদ

  শ্ৰীরামানন্দ রায় রাজা শ্ৰী প্ৰতাপরুদ্রের অধীন পূৰ্ব্ব ও পশ্চিম গোদাবরীর বিশ্বস্ত শাসন কৰ্ত্তার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চৈতন্য মহাপ্ৰভু যখন দক্ষিণ দেশে যাত্ৰা করেন, শ্ৰীসাৰ্বভৌম আচার্য্য বিশেষ অনুরোধ করেন মহাপ্রভু যেন শ্ৰীরামানন্দ রায়ের সঙ্গে মিলিত হন । “তোমার সঙ্গে যোগ্য তেঁহো একজন, পৃথিবীতে রসিক ভক্ত নাহি তার সম''।।চৈঃচঃ মধ্যঃ শ্রীচৈতন্য মহাপ্ৰভু দক্ষিণ দেশ অভিমুখে যাত্ৰা করেন। হরিনামের প্রেম বিতরণ করতে করতে এলেন পশ্চিম গোদাবরীর তীরে । পন্ডিত সাৰ্ব্বভৌমের অনুরোধ অনুযায়ী শ্ৰীরামানন্দ রায়ের সঙ্গে মিলিত হবার ইচ্ছা মহাপ্ৰভুর মনে সদা জাগ্রত ছিল । শ্ৰীমহাপ্ৰভু গোদাবরীর মনোহর তটে এক বৃক্ষমূলে বসে আছেন । তার অঙ্গ কান্তিতে চতুৰ্দ্দিক যেন আলোকিত হচ্ছিল । এমন সময় অনতিদূরে রাজপথ দিয়ে স্নান করতে যাচ্ছেন শ্ৰীরামানন্দ রায়, সাথে বৈদিক ব্ৰাহ্মণগনের বিবিধ বাজনা । শ্ৰীরামানন্দ রায় দূর থেকে উপবিষ্ট বৃক্ষমুলে কান্তিযুক্ত সন্ন্যাসীবরকে একদৃষ্টিতে দৰ্শন করতে লাগলেন এবং মহাপ্ৰভুও তঁকে অপলক নেত্ৰে দেখতে লাগলেন । নয়নে নয়নে হল মিলন । তারপর শ্ৰীরামানন্দ পালকি থেকে নেমে শ্ৰীমহাপ্ৰভুর চরনে দন্ডবৎ ক...

কৃষ্ণ কোন ভক্তকে কীভাবে সাহায্য করেন?????

  কৃষ্ণ কোন ভক্তকে কীভাবে সাহায্য করেন ? প্রশ্ন : আমার প্রশ্নটি খুব তুচ্ছ, কিন্তু তবুও আমি জানতে চাই কীভাবে কৃষ্ণ কোন ভক্তকে সাহায্য করেন? শ্রীল জয়প তাকা স্বামী গুরুমহারাজ: কৃষ্ণ বিভিন্ন উপায়ে একজন ভক্তকে সাহায্য করতে পারেন। আমরা তাঁর অনুগ্রহের পন্থাগুলিকে পরিমাপ করতে পারি না। যেমন ধরুন, একটি মজার গল্প আছে। একটি বড় বন্যাকবলিত এলাকায় এক লোক ছিল। সে তার ঘরে গিয়ে বলত, হে ভগবান! আমাকে এই বিশাল বন্যা থেকে উদ্ধার কর। আর তখন একটি নৌকা এল, সে বলল, না না, আমি চাই কেবল ভগবান এসে আমাকে উদ্ধার করবে। এরপর হেলিকপ্টার এল। না, না, আমাকে কেবল ভগবানই উদ্ধার করবে। এমনকি যখন কৃষ্ণ যখন নিজে সেই ব্যক্তির সামনে উপস্থিত হলেন, সে বলল, তুমি কেন আমাকে আগে বাঁচাওনি? তিনি বললেন, আমি একটি নৌকা পাঠালাম, একটি হেলিকপ্টার পাঠালাম, তুমি আর কী চাও? তো এভাবে তিনি বাহ্যিকভাবে বা অভ্যন্তরীণ উপায়ে সহায়তা করতে পারেন। গীতায় বলা আছে কৃষ্ণ জ্ঞান, স্মৃতি ও বিস্মৃতি দান করেন। সুতরাং তিনি আমাদের সংশয়ও নাশ করেন। ~শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ ২৪শে জুলাই, ২০১৮ চেন্নাই, ভারত

মহান বৈষ্ণব আচার্য শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের তিরোধান তিথি

২৬/১২/২০১৮ মহান বৈষ্ণব আচার্য শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের তিরোধান তিথিতে গৌড়িয় সিংহপুরুষখ্যাত এই মহান আচার্যের জীবনী জানার জন্য পড়ুন নিচের বিশেষ লেখাটি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যৌবনে মাত্র ৪৮ বছর বয়সে জগত থেকে অন্তর্হিত হন। যদিও তাঁর পার্ষদ এবং দৃঢ়চেতা পরম্পরা আচার্যগণ, মহান বৈষ্ণবগণ এই অভিযান এগিয়ে নিয়ে গেছেন, কিন্তু একসময় কিছুকাল পরে মহাপ্রভুর সংকীর্তন আন্দোলন অন্তর্হিত হয়। মহাপ্রভুর শিক্ষা, মহাপ্রভুর নিদের্শনা এবং মহাপ্রভুর ধাম এই জগৎ থেকে অন্তর্হিত হয় এবং তদস্থলে সকল অপসম্প্রদায় গুলো আবির্ভূত হয়ে এমন শিক্ষার বিস্তার ঘটালো যা সম্পূর্ণরূপে মহাপ্রভুর শিক্ষার বিপরীত। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে পবিত্র ধর্মের নীতির ভিত্তিতে গঠিত, কিন্তু তাদের সেই ক্রিয়াকর্মগুলো ছিল সম্পূর্ণ অধার্মিক। এটি কলিযুগের আরেকটি চরিত্র। এই যুগ অধর্মের, তাই অধর্মীয় নীতিসমূহের ব্যাপক প্রসার ঘটবে এবং ধার্মিক নীতিসমূহ উপেক্ষিত হবে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের পরে তা ঘটেছিল। অল্পকথায় বলতে গেলে, তাঁরা চৈতন্য মহাপ্রভুর নামে ধর্মের স্তম্ভস্বরূপ ৪টি বিধিনিষেধ ভঙ্গ ...