সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2021 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও রামানন্দ রায় সংবাদ

  শ্ৰীরামানন্দ রায় রাজা শ্ৰী প্ৰতাপরুদ্রের অধীন পূৰ্ব্ব ও পশ্চিম গোদাবরীর বিশ্বস্ত শাসন কৰ্ত্তার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চৈতন্য মহাপ্ৰভু যখন দক্ষিণ দেশে যাত্ৰা করেন, শ্ৰীসাৰ্বভৌম আচার্য্য বিশেষ অনুরোধ করেন মহাপ্রভু যেন শ্ৰীরামানন্দ রায়ের সঙ্গে মিলিত হন । “তোমার সঙ্গে যোগ্য তেঁহো একজন, পৃথিবীতে রসিক ভক্ত নাহি তার সম''।।চৈঃচঃ মধ্যঃ শ্রীচৈতন্য মহাপ্ৰভু দক্ষিণ দেশ অভিমুখে যাত্ৰা করেন। হরিনামের প্রেম বিতরণ করতে করতে এলেন পশ্চিম গোদাবরীর তীরে । পন্ডিত সাৰ্ব্বভৌমের অনুরোধ অনুযায়ী শ্ৰীরামানন্দ রায়ের সঙ্গে মিলিত হবার ইচ্ছা মহাপ্ৰভুর মনে সদা জাগ্রত ছিল । শ্ৰীমহাপ্ৰভু গোদাবরীর মনোহর তটে এক বৃক্ষমূলে বসে আছেন । তার অঙ্গ কান্তিতে চতুৰ্দ্দিক যেন আলোকিত হচ্ছিল । এমন সময় অনতিদূরে রাজপথ দিয়ে স্নান করতে যাচ্ছেন শ্ৰীরামানন্দ রায়, সাথে বৈদিক ব্ৰাহ্মণগনের বিবিধ বাজনা । শ্ৰীরামানন্দ রায় দূর থেকে উপবিষ্ট বৃক্ষমুলে কান্তিযুক্ত সন্ন্যাসীবরকে একদৃষ্টিতে দৰ্শন করতে লাগলেন এবং মহাপ্ৰভুও তঁকে অপলক নেত্ৰে দেখতে লাগলেন । নয়নে নয়নে হল মিলন । তারপর শ্ৰীরামানন্দ পালকি থেকে নেমে শ্ৰীমহাপ্ৰভুর চরনে দন্ডবৎ ক...

মহাপ্রভুর স্বীকৃত 4টি সম্প্রদায় ও অস্বীকৃত 13টি অপসম্প্রদায়

যে আচার ব্যবহার সামান্য পার্থক্য থাকলেও এরা মহাসম্ভোগবাদী। আচার্য শ্রীল বিনোদ ঠাকুর লিখছেন  বাউল বাউল বলছ বটে বাউল হচ্ছে ক'জনা। দাড়ি চূড়া রেখে ভাইরে লোককে করছ বঞ্চনা।। দাড়ি এবং গোফ রেখে এরা ঘুরে বেড়ায়। এরা পরনারী সঙ্গদোষী।পরের নারী নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। নারী পুরুষের অবাধ মিলনে যেন রাধা কৃষ্ণের প্রেম অনুভব হয়। তাই আবারও ভক্তি বিনোদ ঠাকুর মহাশয় বলছেন সহজ ভজন করছ মামু  সঙ্গে লয়ে পরের বালা  সখিভাবে ভজছেন তারে নিজে হয়ে নন্দলালা।। এসবই তাদের লীলা খেলা।শুক্র,শোণিত, মল মুত্রাদি ভক্ষণ এদের সাধন প্রণালি। 🔘৩. কর্তাভজাঃ  এমতের প্রবর্তক অউলে চাঁদ।এরা গুরুকে কর্তা বলে।গুরুকেই ঈশ্বর ভাবে।গুরুই এদের গৌরাঙ্গ। যেমন, অনুকুল ভক্তরা।হরিচাঁদের দল।এরা ঘোর ভক্তি বিরোধী মায়াবাদি।এদের মাঝে উচ্ছিষ্ট ভোজন প্রথা প্রচলিত আছে।এরা গুরু সত্য হরি সত্য বলে কিন্তু কোন সদাচার পালন করেন না। 🔘৪. নেড়াঃ  কথিত আছে এদের দলে বারশত নেড়া তেরো শত নেড়ী ছিল। এরা শ্রীনিত্যানন্দাত্মজ বীরভদ্র প্রভুর অনুগব্রুব।বীরচন্দ্র প্রভুর উদ্দেশ্য ছিল এরা সদাচারী হয়ে হরিভজন করুক।কিন্তু প্রভু বীরচন্দ্রের সে ইচ্ছা উদ্দেশ্য সফল হয়ন...

নীতি উপাখ্যান

যেমনি করে টক তেঁতুলের সংস্পর্শে দুধ দই হয়ে যায়, তেমনিভাবে কারাগারসদৃশ এই জড়জগতে আমাদের চিত্ত কামে রূপান্তরিত হয়ে আমরা কৃষ্ণবিস্মৃতি হয়ে পড়ি। দেখুন, শাস্ত্রে স্পষ্ট বলা আছে যে, জীবের সব চাইতে বড় শত্রু হচ্ছে কাম। এই কামই শুদ্ধ জীবাত্মাকে এই জড় জগতে আবদ্ধ হয়ে থাকতে অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু কিভাবে......... দেখুন তাহলে! জীব যখন জড়া প্রকৃতির সংস্পর্শে আসে, তখন তার অন্তরের শাশ্বত কৃষ্ণপ্রেম রজোগুণের প্রভাবে কামে পর্যবসিত হয়। তারপর, কামের অতৃপ্তির ফলে হৃদয়ে ক্রোধের উদয় হয়, ক্রোধ থেকে মোহ এবং এভাবেই মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ার ফলে জীব জড় জগতের বন্ধনে স্থায়িভাবে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। আর এজন্যই কামকে বড় শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। একটা বিষয় দেখুন, ভগবান হচ্ছেন সৎ-চিৎ-আনন্দময় আর জীব হচ্ছে এই চিন্ময় আনন্দের আংশিক প্রকাশ। তাহলে আমরা প্রত্যেকেই আনন্দ না পেয়ে কেন কষ্ট পাচ্ছি? কেউ কি কখনোও অন্বেষণ করেছেন? দুধ হচ্ছে প্রকৃত আইডেন্টিফিকেশন, কিন্তু সেই দুধে যখন টক আর তেঁতুল মিশ্রণ করা হয় তখন কি আর সেটা দুধ থাকে? অবশ্যই না। তখন সেটা দইয়ে পরিণত হয়ে যায়। ঠিক তেমনি, ভগবান এই জগতে আমাদের পাঠিয়েছেন নিজেদের সংশোধন করার জন্য...

পৌষ সংক্রান্তিতে কি কি হয়েছিল?

আমরা সবাই পৌষ সংক্রান্তি হিসেবে জানলেও একে মকর, উত্তরায়ণ বা তিল সংক্রান্তিও বলা হয়। চলুন, দেখা নেয়া যাক সেই মহিমান্বিত তিথিতে আসলে কি হয়েছিল! আজ কলিযুগ পাবনাবতারী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ৫১১ তম সন্ন্যাস লীলা মহোৎসব। অর্থাৎ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ১৫১০ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ২৪ বছর বয়সে এই পৌষ-সংক্রান্তির দিনেই কন্টকনগরে অর্থাৎ কাটোয়ায় গুরু কেশবভারতের কাছ থেকে সন্ন্যাস দীক্ষা প্রাপ্ত হন। বৃন্দাবন দাস তাঁর চৈতন্যভাগবতে লিখেছেন এই সংক্রমণ উওরায়ণ দিবসে। নিশ্চয় চলিব আমি করিতে সন্ন্যাসে।। ...................মধ্যখন্ড, ২৬ অধ্যায় আমরা অনেকেই জানি, এক সৌরবর্ষে আমাদের এই মর্ত্যলোকে এক বছর পূর্ণ হলেও দেবতাদের গণনায় বা স্বর্গলোকে সেটা এক দিন মানে ২৪ ঘন্টা। এখন, ২৪ ঘন্টার মাঝে আবার ১২ ঘন্টা দিন এবং বাকী ১২ ঘন্টা রাত বিদ্যমান। তাই স্বর্গলোকে বা দেবতাদের হিসেবে মকর সংক্রান্তি থেকে পরর্বতী ছ'মাস তাদের দিন এবং কর্কট সংক্রান্তি থেকে পরর্বতী ছ'মাস তাদের রাত। অর্থাৎ আমারা সহজেই বুঝতে পারছি যে, আজকের এই মকর সংক্রান্তি থেকেই স্বর্গলোকে নতুন একটি দিনের সূচনা শুরু হয়। আমরা সব...

তোটা গোপীনাথ

যমেশ্বর শিব মন্দিরের মনোরম উদ্যানে গদাধর পণ্ডিত প্রত্যহ শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ করতেন। যেখানে মহাপ্রভু কখনই অনুপস্থিত থাকতেন না। গদাধরের শ্রীমুখে মহাপ্রভু শতবার ধ্রুব মহারাজের উপাখ্যান শ্রবণ করেছেন। একদিন মহাপ্রভু অপ্রাকৃত কৃষ্ণবিরহ লীলা প্রকাশ করলেন। তিনি কৃষ্ণের খোঁজে ভূমি খনন করতে লাগলেন। একসময় একটি পাথরের মুকুটের অগ্রভাগ দেখা গেল। মহাপ্রভু গদাধরকে বললেন,"গদাই, এখানে এক অমূল্য সম্পদ আছে তুমিকি আমার কাছ থেকে তা নিতে চাও?" গদাধর প্রভু বিস্মিত হলেন। অতপর তারা দুজনে মিলে সেই বিগ্রহকে বালুকা রাশি হতে উত্তোলন করলেন। মহাপ্রভু বিগ্রহের নাম দিলেন গোপীনাথ। আর উদ্যানে বিহারী (উড়িয়া ভাষায় তোটা) বলে তাঁর নাম হলো তোটা গোপীনাথ। অতপর শ্রীমন্মহাপ্রভু শ্রী গদাধর প্রভুর ক্ষেত্রসন্ন্যাসের ব্যবস্থা করে তাকে তোটা গোপীনাথের সেবায় নিযুক্ত করলেন।