সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মহাপ্রভুর স্বীকৃত 4টি সম্প্রদায় ও অস্বীকৃত 13টি অপসম্প্রদায়


যে আচার ব্যবহার সামান্য পার্থক্য থাকলেও এরা মহাসম্ভোগবাদী। আচার্য শ্রীল বিনোদ ঠাকুর লিখছেন 

বাউল বাউল বলছ বটে বাউল হচ্ছে ক'জনা।

দাড়ি চূড়া রেখে ভাইরে লোককে করছ বঞ্চনা।।

দাড়ি এবং গোফ রেখে এরা ঘুরে বেড়ায়। এরা পরনারী সঙ্গদোষী।পরের নারী নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। নারী পুরুষের অবাধ মিলনে যেন রাধা কৃষ্ণের প্রেম অনুভব হয়।

তাই আবারও ভক্তি বিনোদ ঠাকুর মহাশয় বলছেন

সহজ ভজন করছ মামু 

সঙ্গে লয়ে পরের বালা 

সখিভাবে ভজছেন তারে

নিজে হয়ে নন্দলালা।।

এসবই তাদের লীলা খেলা।শুক্র,শোণিত, মল মুত্রাদি ভক্ষণ এদের সাধন প্রণালি।

🔘৩. কর্তাভজাঃ 

এমতের প্রবর্তক অউলে চাঁদ।এরা গুরুকে কর্তা বলে।গুরুকেই ঈশ্বর ভাবে।গুরুই এদের গৌরাঙ্গ। যেমন, অনুকুল ভক্তরা।হরিচাঁদের দল।এরা ঘোর ভক্তি বিরোধী মায়াবাদি।এদের মাঝে উচ্ছিষ্ট ভোজন প্রথা প্রচলিত আছে।এরা গুরু সত্য হরি সত্য বলে কিন্তু কোন সদাচার পালন করেন না।

🔘৪. নেড়াঃ 

কথিত আছে এদের দলে বারশত নেড়া তেরো শত নেড়ী ছিল।

এরা শ্রীনিত্যানন্দাত্মজ বীরভদ্র প্রভুর অনুগব্রুব।বীরচন্দ্র প্রভুর উদ্দেশ্য ছিল এরা সদাচারী হয়ে হরিভজন করুক।কিন্তু প্রভু বীরচন্দ্রের সে ইচ্ছা উদ্দেশ্য সফল হয়নি।তারা স্বতন্ত্রতার অপব্যবহার করে মৎস্য মাংসাদি ভক্ষণ পুর্বক অপকর্মে লিপ্ত হয়।শাস্ত্র ও মহাপ্রভুর ভাবধারা এবং গোস্বামীদের আদর্শকে অবজ্ঞা করায় এরা নেড়া বলে কথিত হয়।

🔘৫. দরবেশঃ

 এরা প্রচ্ছন্নবাদী। কারাগার থেকে বিমুক্ত হওয়ার অছিলায় কারারক্ষী কে শ্রীল সনাতন গোস্বামীপাদ ৭০০০ মুদ্রা দিয়ে বলেন, তিনি দরবেশ সেজে মক্কায় যাবেন।কিন্তু সনাতন গোস্বামী মহাপ্রভুর দর্শন করেন কাশিধামে।সেখানে মহাপ্রভুর  কাছে সম্বন্ধ,অভিধেয় এবং প্রয়োজন তত্ত্ব প্রসঙ্গে উপদেশ গ্রহণ করেন।কিন্তু কতক দুর্ভাগা সনাতন গোস্বামীপাদের উদ্দেশ্য না বুজতে পেরে কৃত্রিম উপায়ে দরবেশ সেজে সনাতন ধর্মকে উপেক্ষা করে স্ফটিক ও প্রবালের মালা এবং আলখেল্লা পরিধান করে, দাড়ি, চুল রেখে যত্রতত্র আহার বিহার করে ঘুরে বেড়ায়।

🔘৬. সাঁইঃ

 এরা প্রায় বাউলের মতই। নির্বিশেষবাদি। আলোক সাঁই,ক্ষিরোদ সাঁই,গর্ভ সাঁই,নানক সাঁই এদের উপদেষ্টা ছিল। এরা অহিন্দু আচার পালন করে।

🔘 ৭. সহজিয়াঃ 

চিন্ময় ধর্মের বিকৃত প্রতিফলন কারী এরা।ভগবানের জন্ম কর্ম নিত্য এই তত্ত্ব এরা মানে না।যেমন আমরা কিছু ব্যক্তি আছি।তারা বলেন কৃষ্ণ রক্ত মাংসের গড়া।তা না হলে জরা ব্যাধের শরাঘাতে কেন বিদ্ধ হবে।মাধাইয়ের কলসির আঘাতে নিতাইয়ের মাথা কেন ফাটবে।নিমাই যদি শৌক্র জন্ম না হবেন তবে কেন শচী জগন্নাথ তাঁর মা বাবা হবেন ইত্যাদি তাদের ভাবনা।গীতার মতে এরা মূঢ়।

অবজান্তি মাং মূঢ়া, মানুষীং তনুমাশ্রিতম্।

এই দলের লোকরা বৈষ্ণবে জাতিবুদ্ধি,গুরুকে মর্তবুদ্ধি,প্রসাদকে ডাল ভাত মনে করে।নীচু জাতির স্পর্শে এদের পবিত্রতা নষ্ট হয়ে যায়।

🔘৮. সখিভেকিঃ

এরা বিবর্তনবাদি।নিজের মরদেহকে সখি বা গোপি ভেবে চুল রেখে, খোপা বাধে।শাখা সিদুর, শাড়ি চুড়ি, পায়ে আলতা ধারন করে।

এরা কখন ললিতা,কখনও বিশাখা,কখনও বা চম্পকলদা সখি সেজে গোফ দাড়ি সেফ করে হিজড়ের ন্যায় সেজে কৃষ্ণ সেবার ভান করে।

🔘৯. স্মার্তঃ 

যার প্রবর্তক নবদ্বীপের রঘুনন্দন ভট্টাচার্য

তিনি অসুরদের বিধি বিধান দিয়ে গেছেন।এটা কল্পিত। নবদ্বীপের ভঙ্গ কুলিন ব্রাহ্মণ কুলোদ্ভুত রঘুনন্দন এই জড়কর্মস্মার্ত মতের তথা পাপের পথের জন্মদাতা।

🔘১০. জাত গোঁসাইঃ 

যেটা আমরা আমাদের সমাজে দেখতে পারছি।গোঁসাই গীরিই এদের পেশা।গুরুর ছেলে গুরু আবার তার ছেলেও গুরু।এদের চৌদ্দ গুষ্ঠি গুরু।শির্ষ্যরা এদের কাছে ক্রিতদাস।এরা মহাপ্রভুর নাম ভাঙায় খাই।সে বাড়ির শিষ্য টাকা দিতে পারবে সেটা ভাল।পান বিড়ি সিগারেট গুল সেবন করে।দেখা যাবে বড় সাধু কিন্তু কাজের বেলা অসাধু।

এরা সদাচারী না।দীক্ষা দেই সেই শিষ্য মুরগির চরণ সেবা করে।গুরুও মাঝে মাঝে সেবা করে।যারা যে মন্ত্র চাই তাকে সেই মন্ত্র দান করে।শিষ্য বাড়ানোর কু মতলব।

🔘১১. অতি বাড়িঃ

 উৎকল দেশের জগন্নাথ দাস নামক বৈরাগী এই মতের প্রচারক।

মহাপ্রভুর শিক্ষাকে অতি মার্জিত করার মানসে এরা খুব বাড়াবাড়ি করে।

তাই এদের অতি বাড়ি বলে অভিহিত। 

কথায় বলে বেশি বাড়া ভাল না ঝড়ে ভেঙে যাবে।

🔘১২. চুড়াধারীঃ

এটিও অসম্প্রাদায়

এরা ভোগবাদি,নিজে কৃষ্ণ ভেবে চুড়া ধারন করে।কৃষ্ণের ন্যায় বাঁশি বাজাই। এরা সকল প্রকার ব্যভিচারগ্রস্হ

🔘১৩. গৌরাঙ্গ নাগরীঃ

এটি কাল্পনিক মতবাদ। 

গৌর কৃষ্ণ অভিন্ন। এই অভিন্নতা ভেবে সন্ন্যাসী শিরোমনি শ্রী গৌর সুন্দর কে গৌরাঙ্গ নাগর ভেবে তারা পুজো করে।কিন্তু তারা জানে না শ্রীকৃষ্ণ নাগর হলেও গৌর নাগর নহেন। যদিও কৃষ্ণ গৌরাঙ্গ তবু গৌরাঙ্গ নাগর নহেন তার এই লীলায়। তাই মহাত্মা তোতারাম এদেরও সঙ্গ করতে নিষেধ করছেন।

🔴এসকল স্বীকৃত ৪ সম্প্রদায়  এবং ১৩ অপসম্প্রদায়ের কথা শাস্ত্রের কোথায় আছে, এবং এসকল স্বীকৃত সম্প্রদায় থেকেই কেন দীক্ষা নিবেন তার সব শাস্ত্রীয় প্রমাণ দেওয়া হলো নিচে 🔴

🌿 শুদ্ধভক্তি-প্রতিকূল কত রকমের অপসম্প্রদায় রয়েছে? সেগুলি কে আবিষ্কার করেছেন?

"আউল, বাউল, কর্তাভজা, নেড়া, দরবেশ, সাঁই।

সহজিয়া, সখীভেকী, স্মার্ত, জাত-গোসাঞি।।

অতিবাড়ী, চূড়াধারী, গৌরাঙ্গ-নাগরী।

তোতা কহে, এ তেরর সঙ্গ নাহি করি।।"

                                      (সূত্রঃ গৌড়ীয়-কণ্ঠহার-১৩-১১১)

অসৎ সম্প্রদায় বা অপসম্প্রদায়ের তেরটি নাম উল্লিখিত হয়েছে। আউল, বাউল, কর্তাভজা, নেড়া, দরবেশ, সাঁই,

সহজিয়া, সখীভেকী, স্মার্ত, জাত-গোসাঞি, অতিবাড়ী, চূড়াধারী, গৌরাঙ্গ-নাগরী। এই তের প্রকার অপসম্প্রদায় শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুর পথ পরিত্যাগ করে ব্যভিচারী হয়েছে। 

 🔘শ্রীল তোতারাম দাস বাবাজী মহারাজ এই তালিকা দিয়েছেন। 

তিনি ছিলেন পশ্চিমদেশীয়। বর্তমান শহর নবদ্বীপে তাঁর বড় আখড়া আছে। তাঁর তীব্র শাসন ছিল। তাঁর ইচ্ছা ছিল যে, নবদ্বীপে বসে কেউ যেন ধর্মের নামে ব্যভিচার না করে। তিনি বর্তমান শহর নবদ্বীপের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

🌿পদ্মপুরাণে দেখা যায়,---

সম্প্রদায়বিহীনা যে মন্ত্রাস্তে নিষ্ফলা মতাঃ। অতঃ কলৌ ভবিষ্যন্তি চত্বারঃ সম্প্রদায়িনঃ।

শ্রী-মাধ্বী-রুদ্র-সনকা বৈষ্ণব্য ক্ষিতিপাবনাঃ। চত্বারস্তে কলৌ দেবী সম্প্রদায়প্রবর্ত্তকাঃ॥১॥

অর্থাৎ, যাঁরা সম্প্রদায়-বিহীন বা কোনও সম্প্রদায়-ভুক্ত নন, তাঁদের মন্ত্র ফলদায়ক হয় না। এইজন্য কলিকালে

শ্রী, মাধ্বী, রুদ্র ও সনক এই চারজন ক্ষিতি-পাবন বৈষ্ণব আবির্ভূত হয়ে চারটি সম্প্রদায় প্রবর্ত্তন করবেন।

🌿 ''শ্রী ব্রহ্ম রুদ্র সনক বৈষ্ণব ক্ষিতিপাবন,

 চত্বারন্তে কলৌ ভব্য হি উৎকলে পুরুষোত্তম''।।পদ্মপুরান।।

অর্থাৎ জগতের পবিত্রতা সম্পদানকারী শ্রী, ব্রহ্ম, রুদ্র ও সনক, এই কলিযুগে চারটি সম্প্রদায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ থেকে বা উৎকল দেশ পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীজগন্নাথ থেকে আবির্ভূত হবে।।

🌿 ভক্তমাল-গ্রন্থে দেখতে পাই,---

“রামানুজং শ্রীঃ স্বীচক্রে মধ্বাচার্য্যং চতুর্ম্মুখঃ। শ্রীবিষ্ণুস্বামিনং রুদ্রো নিম্বাদিত্যং চতুঃসনঃ॥”

অর্থাৎ-শ্রী (লক্ষ্মী) রামানুজকে, চতুর্ম্মুখ (ব্রহ্মা) মধ্বাচার্য্যকে, রুদ্র (মহাদেব) শ্রীবিষ্ণুস্বামীকে এবং চতুঃসন

(সনক, সনন্দ, সনাতন, সনৎকুমার) নিম্বাদিত্যকে আপনি আপন সম্প্রদায়-প্রবর্ত্তকরূপে স্বীকার করেন।

এই চার সম্প্রদায় হতে অসংখ্য বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়েছে।” 

🌿 কেন দীক্ষা নিবেন ❓কার কাছ থেকে দীক্ষা নিবেন ❓ অপসম্প্রদায় থেকে দীক্ষা নিলে তার কি ফল         হবে❓

 আমাদের ইন্দ্রিয়সমুহ অপুর্ণ তাই আমরা পরম সত্যকে জানতে পারি না। যেমন কোন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে হলে আমরা সে বিষয়ের জ্ঞানীর নিকট হতে শিক্ষা লাভ করি। তেমনি পরমার্থজ্ঞান লাভ করতে হলে তত্ত্বদর্শী ব্যাক্তি বা পরমার্থতত্ত্ববেত্তা পুরুষের আশ্রয় গ্রহন করতে হয়। এবং এই তত্ত্বদ্রষ্টা পুরুষ হলেন গুরুদেব। এই গুরুদেবও একান্তভাবে আশ্রিত যথার্থ ও যোগ্য শিষ্যের মত কোন তত্ত্বদর্শী ব্যাক্তি বা গুরুদেবের কাছ থেকে এই জ্ঞান লাভ করেছেন। এবং পরবর্তীতে তিনি আবার এই কর্মসাধ্য পারমার্থিক জ্ঞান তার যোগ্য শিষ্যের মাঝে দান করেন।

🌼এইভাবে যথার্থ শিষ্য পরম্পরার মাধ্যমে আদিগুরু পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ থেকে এই জ্ঞান প্রবাহিত হয়েছে। এবং পরবর্ত্তীতে তা একাধিক ধারা বা গুরুপরম্পরা রুপ বা সম্প্রদায় সৃষ্ট হয়েছে। 

তাই শুদ্ধ পরম্পরা ধারা বা সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত না হলে জীবের  পারমার্থিক জীবন, তার ইহলোক ও পরলোক দুটোই নষ্ট হয়।

🌼এই চারটি সম্প্রদায়ে চারজন আচার্য্য দ্বারা কলিযুগে পারমার্থিক জ্ঞান প্রবাহিত হয়েছে।

১। রামানুজাচার্য (শ্রী সম্প্রদায়)

২। মধবাচার্য ( ব্রহ্ম সম্প্রদায়)

৩। বিষ্ণুস্বামী ( রুদ্র সম্প্রদায়)

৪। নিম্বাকাচার্য ( কুমার সম্প্রদায়)

🌼শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই চারটি সম্প্রদায় ছাড়া অন্যান্য নিজ মনগড়া অপসম্প্রদায়গুলিকে ত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

🌼শাস্ত্র ও তত্ত্ববিদ্গনের মতে চারটি শুদ্ধ পরম্পরায় ধারা বর্তমান আছে এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে যত সম্প্রদায় সৃষ্ট হয়েছে তা সবই অপসম্প্রদায়। 

🌿 যারা উপরোক্ত এ চার সম্প্রদায়ের বাহিরে দীক্ষা নিবেন, তাদের জনম বৃথা যাবে এবং পরবর্তী জনমে পশুযোনী প্রাপ্ত হবে।

🌼তাই মানব জীবন স্বার্থক করতে হলে, গোলকধাম- যা আমাদের সত্যিকারের গন্তব্যস্থান, সেখানে যেতে হলে অবশ্যই এ চার সম্প্রদায়ের সিদ্ধ দীক্ষা পরম্পরা হতে দীক্ষা নিতে হবে। তবেই পরমেশ্বর এর সেবার অধিকারী হতে পারবো, তার ভজনের মাধ্যমে তুষ্ট করে তার চরণ যুগল লাভ করতে পারবো। এবং তা অবশ্যই সিদ্ধ গুরুপরম্পরা তথা সিদ্ধ দীক্ষা পরম্পরার মাধ্যমে।

🌼অনেকেই বিভিন্ন মত ভালো লাগে বলে যেখান সেখান হতে দীক্ষা নিয়ে নেন, এবং তা সিদ্ধ না । তাই দীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সাবধান।

🔘উক্ত চার সম্প্রদায় পরম্পরা ধারায় আগত শিক্ষা প্রদান করাই গুরুপরম্পরার উদ্দেশ্য।

🔴 অন্যথায় গুরুপরম্পরা কেবল একটি শারীরিক পরম্পরা বলে গন্য হবে। 

মনে রাখবেন,  অপসম্প্রদায়গুলি কেবল তাদের গুরু-নামধারী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে,, যাদের দেওয়া মন্ত্রে কোন ক্রিয়া হয় না।

🌿#তাই গুরু নির্বাচনের পুর্বে আমাদের অবশ্য কর্তব্য গুরুদেবের পরম্পরা বিষয়ে অনুসন্ধান করা।

।হরেকৃষ্ণ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও রামানন্দ রায় সংবাদ

  শ্ৰীরামানন্দ রায় রাজা শ্ৰী প্ৰতাপরুদ্রের অধীন পূৰ্ব্ব ও পশ্চিম গোদাবরীর বিশ্বস্ত শাসন কৰ্ত্তার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চৈতন্য মহাপ্ৰভু যখন দক্ষিণ দেশে যাত্ৰা করেন, শ্ৰীসাৰ্বভৌম আচার্য্য বিশেষ অনুরোধ করেন মহাপ্রভু যেন শ্ৰীরামানন্দ রায়ের সঙ্গে মিলিত হন । “তোমার সঙ্গে যোগ্য তেঁহো একজন, পৃথিবীতে রসিক ভক্ত নাহি তার সম''।।চৈঃচঃ মধ্যঃ শ্রীচৈতন্য মহাপ্ৰভু দক্ষিণ দেশ অভিমুখে যাত্ৰা করেন। হরিনামের প্রেম বিতরণ করতে করতে এলেন পশ্চিম গোদাবরীর তীরে । পন্ডিত সাৰ্ব্বভৌমের অনুরোধ অনুযায়ী শ্ৰীরামানন্দ রায়ের সঙ্গে মিলিত হবার ইচ্ছা মহাপ্ৰভুর মনে সদা জাগ্রত ছিল । শ্ৰীমহাপ্ৰভু গোদাবরীর মনোহর তটে এক বৃক্ষমূলে বসে আছেন । তার অঙ্গ কান্তিতে চতুৰ্দ্দিক যেন আলোকিত হচ্ছিল । এমন সময় অনতিদূরে রাজপথ দিয়ে স্নান করতে যাচ্ছেন শ্ৰীরামানন্দ রায়, সাথে বৈদিক ব্ৰাহ্মণগনের বিবিধ বাজনা । শ্ৰীরামানন্দ রায় দূর থেকে উপবিষ্ট বৃক্ষমুলে কান্তিযুক্ত সন্ন্যাসীবরকে একদৃষ্টিতে দৰ্শন করতে লাগলেন এবং মহাপ্ৰভুও তঁকে অপলক নেত্ৰে দেখতে লাগলেন । নয়নে নয়নে হল মিলন । তারপর শ্ৰীরামানন্দ পালকি থেকে নেমে শ্ৰীমহাপ্ৰভুর চরনে দন্ডবৎ ক...

কৃষ্ণ কোন ভক্তকে কীভাবে সাহায্য করেন?????

  কৃষ্ণ কোন ভক্তকে কীভাবে সাহায্য করেন ? প্রশ্ন : আমার প্রশ্নটি খুব তুচ্ছ, কিন্তু তবুও আমি জানতে চাই কীভাবে কৃষ্ণ কোন ভক্তকে সাহায্য করেন? শ্রীল জয়প তাকা স্বামী গুরুমহারাজ: কৃষ্ণ বিভিন্ন উপায়ে একজন ভক্তকে সাহায্য করতে পারেন। আমরা তাঁর অনুগ্রহের পন্থাগুলিকে পরিমাপ করতে পারি না। যেমন ধরুন, একটি মজার গল্প আছে। একটি বড় বন্যাকবলিত এলাকায় এক লোক ছিল। সে তার ঘরে গিয়ে বলত, হে ভগবান! আমাকে এই বিশাল বন্যা থেকে উদ্ধার কর। আর তখন একটি নৌকা এল, সে বলল, না না, আমি চাই কেবল ভগবান এসে আমাকে উদ্ধার করবে। এরপর হেলিকপ্টার এল। না, না, আমাকে কেবল ভগবানই উদ্ধার করবে। এমনকি যখন কৃষ্ণ যখন নিজে সেই ব্যক্তির সামনে উপস্থিত হলেন, সে বলল, তুমি কেন আমাকে আগে বাঁচাওনি? তিনি বললেন, আমি একটি নৌকা পাঠালাম, একটি হেলিকপ্টার পাঠালাম, তুমি আর কী চাও? তো এভাবে তিনি বাহ্যিকভাবে বা অভ্যন্তরীণ উপায়ে সহায়তা করতে পারেন। গীতায় বলা আছে কৃষ্ণ জ্ঞান, স্মৃতি ও বিস্মৃতি দান করেন। সুতরাং তিনি আমাদের সংশয়ও নাশ করেন। ~শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ ২৪শে জুলাই, ২০১৮ চেন্নাই, ভারত

মহান বৈষ্ণব আচার্য শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের তিরোধান তিথি

২৬/১২/২০১৮ মহান বৈষ্ণব আচার্য শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের তিরোধান তিথিতে গৌড়িয় সিংহপুরুষখ্যাত এই মহান আচার্যের জীবনী জানার জন্য পড়ুন নিচের বিশেষ লেখাটি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যৌবনে মাত্র ৪৮ বছর বয়সে জগত থেকে অন্তর্হিত হন। যদিও তাঁর পার্ষদ এবং দৃঢ়চেতা পরম্পরা আচার্যগণ, মহান বৈষ্ণবগণ এই অভিযান এগিয়ে নিয়ে গেছেন, কিন্তু একসময় কিছুকাল পরে মহাপ্রভুর সংকীর্তন আন্দোলন অন্তর্হিত হয়। মহাপ্রভুর শিক্ষা, মহাপ্রভুর নিদের্শনা এবং মহাপ্রভুর ধাম এই জগৎ থেকে অন্তর্হিত হয় এবং তদস্থলে সকল অপসম্প্রদায় গুলো আবির্ভূত হয়ে এমন শিক্ষার বিস্তার ঘটালো যা সম্পূর্ণরূপে মহাপ্রভুর শিক্ষার বিপরীত। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে পবিত্র ধর্মের নীতির ভিত্তিতে গঠিত, কিন্তু তাদের সেই ক্রিয়াকর্মগুলো ছিল সম্পূর্ণ অধার্মিক। এটি কলিযুগের আরেকটি চরিত্র। এই যুগ অধর্মের, তাই অধর্মীয় নীতিসমূহের ব্যাপক প্রসার ঘটবে এবং ধার্মিক নীতিসমূহ উপেক্ষিত হবে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অন্তর্ধানের পরে তা ঘটেছিল। অল্পকথায় বলতে গেলে, তাঁরা চৈতন্য মহাপ্রভুর নামে ধর্মের স্তম্ভস্বরূপ ৪টি বিধিনিষেধ ভঙ্গ ...