সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

নভেম্বর, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শ্রী রাস পূর্ণিমা

আসুন রাসলীলা সম্পর্কে জেনে নিই।  পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার বিভূতি শ্রীমতি রাধারাণী সহিত গোপীকাগণ কে নিয়ে বৃন্দাবনের রাগমন্ডলে মহারাস লীলা করেন। (১) রাস কী ? উঃ ঈশ্বরের সাথে আত্মার মহামিলনই রাস। কার্তিকের এই পূর্ণিমার রাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দবনের নিধি বনে বসে তার মোহন বাঁশি নিয়ে বাজাঁতে শুরু করলেন। বাঁশির মধুর আওয়াজ শুধু মাত্র বৃন্দাবন নয়, অখিল ব্রহ্মান্ড কে মোহিত করে ফেলছে। শ্রীকৃষ্ণ যে সকল গোপীদের কথা দিয়েছিলেন তাদের অনেকেই এই রাতের অপেক্ষায় আগে থেকেই সুন্দরবস্ত্র এবং সেঁজে প্রস্তুত ছিলেন।এই গোপীদের মধ্যে কেউ ছিল ৫ বছরের বালিকা, কেউবা ছিল ১৮ বছরের যুবতি আবার কেউ ৮০ বছরের বৃদ্ধা।তারা সবাই যে যেখানে ছিল সবকিছু ছেড়ে নিধিবনের দিকে ছুটে চলে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তখন নিধিবনের কুন্জে বসে ছিলেন, অনন্ত কোটি গোপী বৃন্দ ভগবানের চরণের নিজেদের সপে দিয়ে বলল তারা ভগবানের সাথে নৃত্য করতে উত্‍সুক।  ভগবান জিজ্ঞেস বললেন তারা কেন তাদের স্বামীদের ছেড়ে এখানে এসেছে? গোপীবৃন্দ উত্তরে বলল, এসকল স্বামী ক্ষণিকের। এসব স্বামী শুধু মাত্র মায়া দ্বার আবদ্ধ করে। এরা মাটির মূর্তির মত, যতদিন জগতস্বামী তারা পায়...

রাস পূর্ণিমা তুলসি মহারানী ও শালগ্রাম এর বিবাহ তিথি।

শিবপুরাণ অনুসারে পুরাকালে দৈত্যদের রাজা ছিলেন দম্ভ| দম্ভ ছিলেন বিষ্ণুর উপাসক| দীর্ঘদিন পুত্রহীন থাকার পর তিনি স্থির করলেন ভগবান বিষ্ণুর তপস্যা করবেন পুত্রপ্রাপ্তির জন্য| যেমন ভাবা তেমনি কাজ| গুরু শুক্রাচার্যের কাছ থেকে শ্রী কৃষ্ণমন্ত্র নিয়ে পুস্করে গিয়ে ঘোর তপস্যায় রত হলেন| তাঁর তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে শ্রীবিষ্ণু রাজা দম্ভকে পুত্রপ্রাপ্তির বর দান করলেন| ভগবান বিষ্ণুর বরে যথাসময়ে রাজা দম্ভের ঘর আলো করে জন্মাল একটি পুত্র| পুত্রের নাম রাখা হল শঙ্খচুড়| এই শঙ্খচুড় ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর অভিন্ন হৃদয় বন্ধু সুদামা যাকে শ্রীরাধা ক্রোধান্বিত হয়ে শাপ দিয়েছিলেন অসুরযোনিতে তার জন্ম হবে| শঙ্খচুড় ছিলেন উচ্চাকাঙ্খী পুরুষ| বয়ঃপ্রাপ্তির সাথে সাথেই অমিত ক্ষমতালাভের জন্য পুস্করিণীর মধ্যে গিয়ে ব্রহ্মার তপস্যায় রত হলেন| তার ঘোরতর তপস্যায় প্রসন্ন হয়ে ব্রহ্মা প্রকট হলেন এবং বর দিতে উদ্যত হলেন| শঙ্খচুড় কৃতাঞ্জলিতে প্রার্থনা করলেন তাকে দেবতাদের বিরুদ্ধে অজেয় হবার বর প্রদান করা হোক| ব্রহ্মা মঞ্জুর করলেন প্রার্থনা আর তাকে নির্দেশ দিলেন বদরীবনে গিয়ে তপস্যারতা তুলসীকে বিবাহ করতে| ব্রহ্মার নির্দেশে শঙ্খচুড় বদরীবনে গিয়ে...

বাসনা ও কর্মফল

শ্রীল প্রভুপাদের দৃষ্টিতে, বাসনা ও কর্মফল 👉 বাসনা পূর্ণ করতে কল্পতরু ভগবান কখনোও কার্পণ্য করবেন না। বাসনা পূর্ণ হবেই, কিন্তু কবে এবং কিভাবে হবে-সেটা একমাত্র পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হাতে।  👉 বিধির বিধান অনুসারে- চেতনা, বাসনা, কর্ম-দ্বারা কিভাবে আমাদের পরবর্তী জীবন নির্ধারিত হয় সেই বিষয়ে মহাজনেরা অনেক দৃষ্টান্ত দিয়ে গেছেন। যেমন:- **পদ্মপুরাণ অনুসারে, কেউ যদি উলঙ্গ ভাবে নিজের চেহারা দেখাতে চেষ্টা করে, তবে পরবর্তী জন্মে সে বৃক্ষশরীর লাভ করবে। কোন ব্যক্তি যদি অত্যাধিক ঘুমাতেই চায় তাহলে পরবর্তীতে সে ভালুক-শরীর লাভ করবে। আবার কেউ যদি আমিষাশী হয় তবে তার পরবর্তী জন্ম হবে কোন আমিষাশী পশুপাখির যোনিতে। **গল্প রহস্য: এক সাধু একজন লোককে বলেছিল, তুমি মাছ খেও না! তোমার শরীর-মন ভাল থাকবে। কিন্তু সেই লোকটি তার মৎস্যভোজী ঠাকুর্দার নির্দেশে সাধুর কথা অগ্রাহ্য করেছিল। ঠার্কুদা মৃত্যুকালে মাছের চিন্তা করতে করতে পরজন্মে মৎস্য-শরীরে জন্ম নিয়ে পুকুরে বাস করছিল, লোকটি সেই পুকুরে মাছ ধরে এনে তার স্ত্রীকে রান্না করতে বলল। অদৃষ্ট কর্মফল-রহস্য এমনই যে, কে কাকে ধরছে! কে কাছে খাচ্ছে! তা বুঝে ওঠা মুশকিল। **আব...

উত্থান একাদশী মাহাত্ম্য

কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী মাহাত্ম্য স্কন্দপুরাণে ব্রহ্মা নারদ সংবাদে বর্ণিত আছে। মহারাজ যুধিষ্ঠির বললেন ---হে পুরুষোত্তম! কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম আমার কাছে কৃপা করে বর্ণনা করুন। শ্রীকৃষ্ণ বললেন ---হে রাজন! কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী 'উত্থান' বা 'প্রবোধিনী' নামে পরিচিত। প্রজাপতি ব্রহ্মা পূর্বে নারদের কাছে এই একাদশীর মহিমা কীর্তন করেছিলেন। এখন তুমি আমার কাছে সেই কথা শ্রবণ কর। দেবর্ষি নারদ প্রজাপতি ব্রহ্মাকে বললেন---হে মহাত্মা! যে একাদশীতে ভগবান শ্রী গোবিন্দ শয়ন থেকে জেগে ওঠেন, সেই একাদশীর মাহাত্ম্য আমার কাছে সবিস্তারে বর্ণনা করুন। ব্রহ্মা বললেন---হে নারদ! উত্থান একাদশী যথার্থই পাপনাশিনী, পুণ্যকারী ও মুক্তি প্রদানকারী। এই ব্রত নিষ্ঠা সহকারে পালন করলে এক হাজার অশ্বমেধ যজ্ঞ ও শত শত রাজসূয় যজ্ঞের ফল লাভ হয়। জগতের দুর্লভ বস্তুর প্রাপ্তির কথা কি আর বলব। এই একাদশী ভক্তি পরায়ন ব্যক্তিকে ঐশ্বর্য, প্রজ্ঞা, রাজ্য ও সুখ প্রদান করে। এই ব্রতের প্রভাবে পর্বত প্রমাণ পাপরাশি বিনষ্ট হয়। যারা একাদশীতে রাত্রি জাগরণ করেন, তাদের সমস্ত পাপ ভস্মীভূত হয়। শ্রেষ্ঠ মুনিগণ ...

নোয়াখালীতে অন্নকূট মহোৎসব উদযাপন

নোয়াখালীর ইসকন কর্তৃক পরিচালিত শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ গৌর-নিত্যানন্দ মন্দির ও শ্রীশ্রী রাধা গোকুলানন্দ গৌরহরি মন্দিরে অন্নকূট মহোৎসব উদযাপন করা হয়। শ্রীল জীব গোস্বামী তাঁর ‘গোপাল চম্পু ‘ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন – শরতের ঠিক মাঝামাঝি আসে কার্তিক মাস। সেই সময় এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ব্রজবাসীরা। সেই সময় তাঁরা ইন্দ্র পূজা করেন। ব্রজবাসীরা সবাই তাই অত্যন্ত ব্যস্ত। কৃষ্ণের বয়স তখন সাত বছর। তাঁর পিতা এবং অন্যান্য লোকেদের নানান কাজে ব্যাস্ত দেখে কৃষ্ণ জিজ্ঞাসা করলেন তোমরা কি করছো পিতা? তখন নন্দ মহারাজ বললেন যে, আমরা ইন্দ্রপূজা করছি। কৃষ্ণ জিজ্ঞাসা করলেন ইন্দ্রপূজা কেন করছো? নন্দ মহারাজ বললেন যে, দেখো, আমরা তো বৈশ্য, গোপজাতি। কৃষি এবং গোপালন হচ্ছে আমাদের জীবিকা। গো-পালনের জন্য আমাদের ঘাসের দরকার, চাষবাসের জন্য আমাদের বৃষ্টি দরকার আর ইন্দ্র হচ্ছেন বৃষ্টির দেবতা। তাই আমরা ইন্দ্রের পূজা করি যাতে ইন্দ্র আমাদের প্রতি প্রসন্ন হয়ে বৃষ্টি দান করেন। কৃষ্ণ বললেন, বাবা, সমুদ্রের মাঝখানে তো কেউ ইন্দ্র পূজা করে না, তা হলে কেন সেখানে বৃষ্টি হয়? নন্দ মহারাজ একটু চিন্তা করে দেখলেন যে তাইতো, আমরা ভাবছি ...

রমা একাদশী মাহাত্ম্য

রমা একাদশী  একসময় যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে বললেন-হে জনার্দন। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশীর নাম ও মাহাত্ম্য কৃপা করে আমায় বলুন। শ্রীকৃষ্ণ বললেন-হে রাজন। মহাপাপ দুরকারী সেই একাদশী ‘রমা’ নামে বিখ্যাত। আমি এখন এর মাহাত্ম্য বর্ণনা করাই, আপনি তা মনোযোগ সহকারে শবণ করুন। পুরাকালে মচুকুন্দ নামে একজন সুপ্রসিদ্ধ রাজা ছিলেন। দেবরাজ ইন্দ্র, যম, বরুণ ও ধনপতি কুবেরের সাথে তার বন্ধুত্ব ছিল। ভক্তশ্রেষ্ঠ বিভীষণের সাথেও তার অত্যন্ত সম্ভাব ছিল। তিনি ছিলেন বিষ্ণুভক্ত ও সত্যপ্রতিজ্ঞ। এইরূপে তিনি ধর্ম অনুসারে রাজ্যশাসন করতেন। চন্দ্রভাগা নামে তার একটি কন্যা ছিল। চন্দসেনের পুত্র শোভনের সাথে তার বিবাহ হয়েছিল। শোভন একসময় শ্বশুর বাড়িতে এসেছিল। দৈবক্রমে সেইদিন ছিল একাদশী তিথি। স্বামীকে দেখে পতিপরায়ণা চন্দ্রভাগা মনে মনে চিন্তা করতে লাগল।- হে ভগবান! আমার স্বামী অত্যন্ত দুর্বল, তিনি ক্ষুধা সহ্য করতে পারেন না। এখানে আমার পিতার শাসন খুবই কঠোর। দশমীর দিন তিনি নাগরা বাজিয়ে ঘোষণা করে দিয়েছেন যে, একাদশী দিনে আহার নিষিদ্ধ। আমি এখন কি করি! রাজার নিষেধাজ্ঞা শুনে শোভন তার প্রিয়তমা পত...

বহুলাষ্টমী

 -:বহুলাষ্টমী:- বৈকুণ্ঠাজ্জনিতো বরা মধুপুরী      তত্রাপি রাসোৎসবাদ্ বৃন্দারণ্যমুদারপাণিরমণা-        ত্তত্রাপি গোবর্ধন। রাধাকুণ্ডমিহাপি গোকুলপতেঃ        প্রেমামৃতাপ্লাবনাৎ কুর্যাদস্য বিরাজতো গিরিতটে          সেবাং বিবেকী ন কঃ।। বৈকুণ্ঠ অপেক্ষা শ্রষ্ঠ মাথুর্মণ্ডল।তদপেক্ষা বৃন্দাবন যথা রাসস্থল।। তদপেক্ষা গোবর্ধন নিত্য কেলিস্থান।রাধাকুণ্ডে তদপেক্ষা প্রেমের বিঞ্জান।। শ্রীনন্দন্দন আজ ও বনে গমন করে কুন্দ-কুসুম-মাল্যে তাঁর আনন্দময় শোভাবর্ধন পূর্বক গোপ ও গোধনসমূহ সঙ্গে প্রণয়ীগণের হর্ষ উৎপাদন করতে করতে যমুনা তটে বিহার করছে। সেইসময় বিশাল কুঁজ বিশিষ্ট, ভয়ংকর বৃষাকৃতির  "অরিষ্টাসুর" গর্জন করতে করতে তীক্ষ্ণ শৃঙ্গ দ্বারা ভূমিতল বিদীর্ণ করছিল। এতে গোপ-গোপীগণ ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হলেন, তার তীক্ষ্ণ প্রতিধ্বনিতে গর্ভবতী ধেনু ও নারীগণের গর্ভস্রাব ভ্রুণ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। গৃহপালিত পশুগণ ভয়ে গোষ্ঠ পরিত্যাগ করেছিল। এই অবস্থায় ব্রজবাসীগণ "হে কৃষ্ণ, হে কৃষ্ণ' বলে চিৎকার করে শ্রীগোবিন্দের শরণাগত হয়েছিলেন। এই পাহাড়সম অরিষ্টাসুরকে...
দামোদর মাসে প্রতিদিন শ্রী শ্রী দামোদরাষ্টকম কীর্তনের সহিত ভগবান শ্রী রাধা-দামোদরকে প্রদীপ নিবেদন করুন। নমামীশ্বরং সচ্চিদানন্দরূপং লসৎ-কুণ্ডলং গোকুলে ভ্রাজমানম্। যশোদভিয়োলূখলাব্ধাবমানং পরামৃষ্টমত্যং ততো দ্রুত্য গোপ্যা ॥১॥ অনুবাদ: যিনি সচ্চিদানন্দ-স্বরূপ, যাঁর কর্ণযুগলে কু-ল আন্দোলিত হচ্ছে, যিনি গোকুলে পরম শোভা বিকাশ করছেন এবং যিনি শিক্য অর্থাৎ শিকায় রাখা নবনীত (মাখন) অপহরণ করায় মা যশোদার ভয়ে উদূখলের উপর থেকে লম্ফ প্রদান করে অতিশয় বেগে ধাবমান হয়েছিলেন ও মা যশোদাও যাঁর পশ্চাতে ধাবিত হয়ে পৃষ্ঠদেশ ধরে ফেলেছিলেন, সেই পরমেশ্বররূপী শ্রীদামোদরকে প্রণাম করি। রুদন্তং মুহুর্নেত্রযুগ্মং মৃজন্তং করাম্ভোজযুগ্মেন সাতঙ্কনেত্রম্। মুহুশ্বাসকম্প-ত্রিরেখাঙ্ককণ্ঠ- স্থিত-গ্রৈব-দামোদরং ভক্তিবদ্ধম্ ॥২॥ অনুবাদ: যিনি জননীর হস্তে যষ্টি দেখে রোদন করতে করতে দু’খানি পদ্মহস্ত দ্বারা বারবার নেত্রদ্বয় মার্জন করেছেন, যিনি ভীতনয়ন হয়েছেন ও সেইজন্য মুহুর্মুহুঃ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত কম্প-নিবন্ধন যাঁর কণ্ঠস্থ মুক্তাহার দোদুল্যমান হচ্ছে এবং যাঁর উদরে রজ্জুর বন্ধন রয়েছে, সেই ভক্তিবদ্ধ শ্রীদামোদরকে বন্দনা করি। ইতীদৃকস্বলীলাভিরানন্...